nটাকা চিবিয়ে খাওয়ার ঘটনার পর কিছুদিন কাটলো বেশ দু:খ কষ্টের মধ্যে।
বড়বোনের হাস্যরসাত্মক অপমান আর মায়ের বকুনির মধ্যে।তখন মা আমাকে প্রতিদিন বিকেলে জামা জুতো পড়িয়ে একেবারে ফিট বাবুটি সাজিয়ে দিতেন।আমিও লক্ষী বাবুর মত হাটি হাটি পা পা করে খেলার মাঠে হাজির হতাম অন্যদের সাথে খেলায় যোগ দেবার মনোবাসনা নিয়ে।কিন্তু দু:খের বিষয় কেউ আমাকে খেলতে নিত না
।নিলেও দুধভাত হিসেবে
।মানে শুধু লোকসংখ্যা বাড়ানোড় জন্য।আমার কোন পারফরমেন্সের কোন দাম ছিলনা
।আমার খেলাটা আর কেউ খেলে দিত।অধিকাংশ সময় ই মাঠের কিনারে বসে থাকতাম।বল কুড়িয়ে দিতাম।সিবুড়ি খেলার সময় হাততালি দিতাম।ব্যাডমিন্টনের সময় কর্ক কুড়িয়ে দিতাম।এটাই প্রায় নিয়মিত হয়ে গিয়েছিল।
n
nকিন্তু এভাবে আর কয়দিন থাকা যায়
। একসময় দৌড়ানোর জন্য আর ওদের মত শক্ত হাতে খেলার জন্য আমার হাত পা ও নিশপিশ করতে লাগল।কিন্তু আমি যতই আবদার ধরি আমায় খেলায় নেয়ার জন্য আমার চেয়ে কিছুটা বড় ভাইবোনদের কাছে,আমাকে ওরা কিছুতেই খেলায় নেয়না।তো এখন কী করা যায়
?কিছু একটা করতে হয়!অনেক ভেবে চিন্তে একটা বুদ্ধি বের করলাম
।আমাদের মাঠের পাশে একধরনের গাছ ছিল।নাম কী মনে নেই।ঐ গাছের ফল থেকে একধরনের আঠা বের হয়।ছোট ছোট টিকটিকির ডিমের মত সবুজ ফলগুলো জায়গামত ছুড়ে মাড়তে পারলে একদম সেটে থাকবে গায়ের সাথে কায়দা মত
।
n
nযেই ভাবা সেই কাজ।মাঠের সাইডে প্রতিদিনের মত বসে আছি।হাতের মুঠোয় পলিথিনে একগাদি আঠা ফল।সবাই মিলে ফুটবল খেলছিল।বলটা এসে পড়ল ঠিক আমার পায়ের কাছে।আমি সুন্দর মত একটা ফল সেটে দিয়ে বলের গায়ে বলটা ফেরত দিলাম
।এইবার বলের গায়ে আঠা ছড়াতে লাগল কায়দামত
।একটু পর দেখি বলে খেলোয়ার লাথিটা মাড়লো ঠিকই কিন্তু বলতো আর উড়ালপংখীর মত উড়াল দেয় না
।চারদিকে রে রে পড়ে গেল।এই কাজ কে করেছে?
।বাট কালপ্রিট খুজে পাওয়া গেল না
।
n
nবল ধুয়ে এনে আবার মাঠে গড়ানো হল।সেইদিন আর বলে লাগাইলাম না।এবার দেখা যাক অন্যজায়গায় আ্যপ্লাই করে কি হয়!
।আমার পাশের ঘরের এক বছরের বড় ভাই আসলো আমার পাশে।এখনি সে মাঠে নামবে।টিচার ছুটি দিয়েছে।আমি অনুনয় করলাম,”ভাইয়া,মোরে খেলতে লবি।”
n-“তুই পার?”
n-”হ পারি?”
n-“ক তো ফাউল করে কেমনে?”
n-“ল্যাং মাড়লেইতো ফাউল অয়”
n-“মার তো”
n-“তুই পার?”
n-”হ পারি?”
n-“ক তো ফাউল করে কেমনে?”
n-“ল্যাং মাড়লেইতো ফাউল অয়”
n-“মার তো”
n
nআমি তাকে একটা ল্যাং মারার চেস্টা করলাম।না পেরে নিজেই ল্যান্ড করলাম মাটিতে
।যাইহোক সে বলল,”এহ্ পারেনা ফাউল করতে আবার আইছে ফুটবল খেলতে।সাইজেও তো লিলিপুট।আর এক্কালে ফিটফাট সাইজ্জা আইছে!ইহ্!”
n
nশেষ কথাটা আমার গায় আগুন ধরিয়ে দিল।”
খাড়া তোরে আইজ মজা দেহাই”মনে মনে ভাবলাম।সে আরো কিছুখন পাশে দাড়িয়ে ছিল।সুন্দরমত কায়দা করে তার সারা পিঠে,প্যান্টের পিছনের দিকে আমার সংগ্রহে যত আঠা ফল ছিল, লাগিয়ে দিলাম
।
n
nসন্ধ্যের একটু পরে,রাতের বেলা।শুনলাম সেই পরিচিতকন্ঠের গগনবিদারী চিৎকার।তার মানে আমি সাকসেসফুল।ফুটবল খেলায় সে প্রতিদিন জেতে এবং যথারীতি জামাকাপড় ও কাঁদায় মাখে।কিন্তু তার মা মারে না কখনও।সেদিন বাছাধন হারলো এবং জামাকাপড়ে কাঁদা ও আঠা দুই ই লাগাতে তার আম্মাজানের জামা প্যান্ট ধৌত করতে সেদিন জান বের হয়ে গিয়েছিল।যার ফল ছ্যাচা আর ছ্যাচা
।আমি তার ছ্যাচা খাওয়ার ঝাপুস ঝুপুস শব্দ আর কান্না শুনে যারপর নাই খুশিতে বাকবাকুম পায়রা
।আর আটতে লাগলাম পরের দিনের জন্য নতুন ষড়যন্ত্র
।
n
nআপনারা পরের দিনের মিশনে আমার সংগে থাইকেন
,দেখবেন ওরা আমারে বাপ বাপ কইয়া কেমনে খেলতে লয়


!
n
nলেখার সময়ঃ ২৯ শে জুন, ২০১০ রাত ১:১৬
n

